দেখামাত্রই গুলির নির্দেশের খবর অস্বীকার শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষাপ্রধানের

Srilanka_Army

শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দেওয়ার খবর অস্বীকার করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষাপ্রধান ও সেনা কমান্ডার জেনারেল শাভেন্দ্র সিলভা। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী এ ধরনের কাজ করবে না। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের বরাতে এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল ফ্রন্টলাইন সোশ্যালিস্ট পার্টির নেতা দুমিন্দা নাগামুয়া দাবি করেছিলেন, শ্রীলঙ্কার সশস্ত্র বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে সে অভিযোগ নাকচ করে দেন প্রতিরক্ষাপ্রধান ও সেনা কমান্ডার জেনারেল শাভেন্দ্র সিলভা। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কোনো অবস্থাতেই এ ধরনের লজ্জাকর কর্মকাণ্ডে জড়াবেন না।

শ্রীলঙ্কার রাস্তায় সেনা টহল  ছবি: রয়টার্স

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন সিলভা। তিনি সেনাবাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশটিতে যারা জনগণের সম্পদ নষ্ট করবে কিংবা ব্যক্তিগতভাবে কারও ক্ষতি করবে, তাদের গুলি করার জন্য গতকাল তিন বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র ডেইলি মিররকে বলেন, ‘জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন কিংবা অন্যের ক্ষতিসাধনে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ফাঁকা গুলি ছুড়তে তিন বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।’

শ্রীলঙ্কায় কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে ওঠার পর বিক্ষোভকারীদের দমাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করে সরকার। বিক্ষোভস্থলে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও বেড়েছে। এর মধ্যেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এমন নির্দেশ দেয়।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে যাঁরা শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন, তাঁদের ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে।

সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা শ্রীলঙ্কার মোরাতুয়ার মেয়র সালমান লাল ফার্নান্দো এবং এমপি সনাৎ নিশান্ত, রমেশ পাথিরানা, মাহিপালা হেরাথ, থিসা কুত্তিয়ারাচ্চি ও নিমল লাঞ্জার সরকারি বাসভবনও পুড়িয়ে দিয়েছেন।

ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা শ্রীলঙ্কার পদুজানা পেরামুনা দলের এমপিদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার পুদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) দলের কিছু কার্যালয়ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। সেই সঙ্গে চলছে চরম রাজনৈতিক অচলাবস্থা।

গত সোমবার তুমুল বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তাতেও জনরোষ কমেনি। গতকাল রাতে হাজারো বিক্ষোভকারী কলম্বোয় রাজাপক্ষের বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা রাজধানীর ‘টেম্পল ট্রিজ’ বাসভবনের মূল দোতলা ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are makes.