শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত তথ্য

bangladesh

শিক্ষা মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা পরবর্তী মাধ্যমিক খাতের জন্যে অগ্রগামী নীতি পরিকল্পনা এবং উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় মূলত মাদ্রাসা, কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা পদ্ধতিসহ অন্তর্ভুক্ত দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করে থাকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত হয় ১৯৭১ সালে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিনস্ত সংস্থাসমূহ যেমন, প্রাথমিক স্তর পরবর্তী স্বীকৃত সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কারিগরি স্কুল ও কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, প্রকৌশল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম তদারকি করে থাকে। বর্তমানে প্রাথমিক স্তর পরবর্তী প্রায় ৪০৪৩৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়/কলেজ/মাদ্রাসা এবং ৩৯টি পাবলিক ও ৯৫টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু রয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যাবলী ও দায়িত্বঃ
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা মূলত কেন্দ্রীভূত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায় দায়িত্ব ও কার্যাবলী নিচে আলোচনা করা হলোঃ-

১। শিক্ষা সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণঃ

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত সকল ধরণের নিয়ম কানুন নির্ধারণের দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানটির উপর। যেমনঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়ন করে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা উত্তোলন সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও গ্রেড তৈরি করে থাকে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা প্রণয়ন করে এই মন্ত্রণালয়।

২। শিক্ষার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও বিধি বিধান জারিঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করে থাকে এবং বিধি বিধান জারি করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় মহান জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করে এবং তা সর্বসম্মতিভাবে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়। যেমনঃ ২০১৭ সালে সংসদে পাশ হয় যে স্কুল ম্যানিজিং কমিটেতে কোন জাতীয় সংসদের সাংসদ থাকতে পারবেনা। আইন দ্বারা তাদের পদ নিষিদ্ধ করার রুল জারি হয়।
এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানটি নানা বিধি বিধান জারি করে। যেমনঃ দেশের নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে , সমমানের মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত সহ শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাঁতার প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি। উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরি ইত্যাদি সংক্রান্ত বিধি বিধান জারি করে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও আরও কিছু কাজ করে।
যেমনঃ বর্তমানে সকল স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকহারে বেতন না আদায়ের বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করে; চাঁদা আদায়ের বিষয়টিও নীতিমালার মাধ্যমে জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়; শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আচরণবিধি প্রণয়নে নীতিমালা তৈরি;শিক্ষার কোন স্তরেই শিক্ষার্থী যাতে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের মুখোমুখি না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করার রুল জারি;

৩। শিক্ষার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নঃ
শিক্ষাকে গুণগত ও যুগোপযোগী করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়,
শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ :

শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে;
শিক্ষায় আই.সি.টি. ব্যবহারের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে (২০১২-২০২১);
মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ সকল শিক্ষার্থীদের বছরের ১ম দিনে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে ;
১৯৯০ সাল হতে সরকার শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে আসছে; দরিদ্র ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার চাহিদা মেটানোর জন্য উপবৃত্তি প্রদান করছে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে; পাঠ্যপু্স্তকের ক্রিপ্ট মূল্যায়নের জন্য একটি স্বতন্ত্র পাঠপুস্তক মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে;
সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে;

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি/গভর্নিং বডি পূর্ণ:প্রতিষ্ঠা;

শ্রেণিকক্ষে পাঠদান মনিটরিং এর জন্য কমিটি গঠন; শিক্ষক প্রশিক্ষণ জোরদারকরণ;
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলাম আধুনিকায়ন; মাদ্রাসাসহ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০,০০০ কম্পিউটার বিতরণ;
শিক্ষকদের সৃজনশীল পদ্ধতির উপর প্রশিক্ষণ প্রদান।

৪। ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও অবসর গ্রহণের অনুমতি প্রদানঃ
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন দ্বারা সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষা ক্যাডারদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও অবসরের জন্য অনুমতি প্রদান করে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়োগ দেয়, তাদের অন্য যায়গায় বদলি করে দেয়। আবার তাদের পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
চাকরির নির্ধারিত সময় শেষ হবার পর অবসর গ্রহণের অনুমতি প্রদান করে থাকে। এছাড়াও ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের শাস্তির ব্যবস্থাও করে এই মন্ত্রণালয়। এমনি তাদের প্রত্যাহার করা হয়।

৫। শিক্ষক- কর্মচারী নিয়োগ বিধি বিধানঃ
প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের চাকরি ক্ষেত্রে নিয়োগ, জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ, পদোন্নতি, পদায়ন, সিলেকশন গ্রেড প্রদান ও শৃংখলা রক্ষার্থে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অপরিহার্য দায়িত্ব পালন করে থাকে।
এর অধিদপ্তরাধীন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম/দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড ক্যাডার/ নন-ক্যাডার পদে সরাসরি নিয়োগ, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে জাতীয়করণকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল আত্তীকরণ, উন্নয়ন প্রকল্প হতে রাজস্ব খাতে জনবল স্থানান্তর, বিলুপ্ত রাজস্ব পদের জনবল আত্তীকরণ, পদোন্নতি, পদাবনমন, বিভাগীয় প্রার্থীরূপে নিয়োগ, পদ/বেতন সোপান উন্নীতকরণ ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করে। প্রথম/ দ্বিতীয় শ্রেণির ক্যাডার/ নন-ক্যাডার গেজেটেড সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ, পদোন্নতি ও পদায়নে নানামুখী বিধি বিধান জারি করে।

৬। শিক্ষক/ কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের বেতন-ভাতা/ স্কেল নির্ধারণঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীল রাখার নিমিত্তে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন- স্কেল নির্ধারণ করে থাকে এবং তা সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করার ব্যবস্থা করে সময়মত। বিভিন্ন গ্রেড অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মচারীদের বেতন সুবিধা প্রদান করে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষকদের মর্যাদা, অধিকার এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য নিশ্চিত করতে স্তর নির্বিশেষে সকল শিক্ষকের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো প্রণয়ন করা এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের মধ্যে পরে।

৭। শিক্ষক- কর্মকর্তাদের দেশে- বিদেশে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকরণঃ
বাংলাদেশের শিক্ষাকে মানসম্মত করার জন্য শিক্ষক বড় ভুমিকা পালন করে থাকে। আর এর জন্য প্রয়োজন যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক। শিক্ষকদের দক্ষ ও আধুনিক হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়। শুধুমাত্র শিক্ষকই নয়, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণের আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

৮। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠনঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্রিটিশ আমল থেকেই বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর আমাদের দেশে অনেক গুলো শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেমন,
ড. কুদরত-ই খুদা কমিটি ১৯৭২
কাজী জাফর আহম্মেদ শিক্ষা প্রণয়ন কমিটি ১৯৭৮
ড. মজিদ খান শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি ১৯৮৩
মফিজ উদ্দিন শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি ১৯৮৭
ড. শামসুল হক শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি ১৯৯৬
শামসুল হক শিক্ষা কমিশন ১৯৯৭
অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা শিক্ষা কমিশন ২০০৩
অধ্যাপক কবির চৌধুরী শিক্ষা কমিশন ২০০৯
শিক্ষানীতি ২০১০

৯। শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের নীতিমালা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণঃ
শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভালোভাবে পরিচালনার জন্য যেসব নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে সেগুলো নির্ধারণ করা ও কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তার জন্য পরিকল্পনা করা ও কৌশল নির্ধারণ করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজ।

১০। জাতীয় শিক্ষা ও শিক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থার পুনর্গঠন উদ্যোগ গ্রহণঃ
বাংলাদেশে শিক্ষা ও শিক্ষা প্রশাসনের আমূল সংস্কার দরকার। এর জন্য প্রথম পর্যায়ে দরকার সর্বজনীন কল্যাণে বিবেকবান চিন্তাশীল ব্যক্তিদের দূরদর্শী চিন্তা ভাবনা, আলোচনা-সমালোচনা ও বিচার-বিবেচনা। শিক্ষানীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ধারণা যদি ঠিক হয়, তাহলে সেই লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে চেষ্টা চালালে সমাধানযোগ্য সব সমস্যারই সমাধান করা যাবে। আর এই লক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করে থাকে।

লক্ষ্য ও যাত্রা পথ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে এগোতে হবে। উন্নত প্রযুক্তি ও শ্রমশক্তির কল্যাণে উৎপাদন ও সম্পদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু নৈতিক চেতনা নিম্নগামী হওয়ার ফলে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং মানুষ মানবিক গুণাবলি হারিয়ে চলছে। এ অবস্থায় জাতীয় শিক্ষা প্রশাসন এ শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যবস্থারও সংস্কার দরকার। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ও শিক্ষাক্ষেত্রে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে সহজে এর উন্নতি সাধন সম্ভব হবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

বর্তমানে শিশু কিশোররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে শিক্ষার্থী হিসেবে, কিন্তু তার পরেই তারা বইয়ের বোঝা পিঠে নিয়ে পরীক্ষার্থী হয়ে যায়, শিক্ষার্থী আর থাকতে পারে না। এই অবস্থা পরিবর্তন করতে মন্ত্রণালয় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। সারা দেশের পাবলিক পরীক্ষার ফল এক কেন্দ্র থেকে প্রকাশ করা এবং ফল প্রকাশের সময় শিক্ষার পরীক্ষা সর্বস্ব ধারণা প্রচার করা বন্ধ করতে উদ্যোগ নেয়। প্রশ্ন পত্র ফাঁস রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এমনকি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন উঠিয়ে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের অনুমোদন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১২। উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থাঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তি প্রদান করে।

১৩। শিক্ষায় বিভিন্ন স্তরের জন্য শিক্ষাক্রম প্রণয়নের নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আদেশ- নির্দেশ প্রদানঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষায় বিভিন্ন স্তরের জন্য শিক্ষাক্রম প্রণয়নের নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আদেশ- নির্দেশ প্রদান করে।

১৪। অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম, অনুমোদন ও সহযোগিতা প্রদানঃ

শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম তদারকি করে এবং তা অনুমোদন ও বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে। যেমন,
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন করা।
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা স্তরের সাধারণ শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত নীতি প্রণয়নে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে সাহায্য করা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষা কার্যক্রমকে তদারকি করা।
উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ, বাস্তবায়ন এবং তদারকি করা।
দেশের সাধারণ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা।
অধিদপ্তরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার কারিকুলামের পরিবর্তন সম্পর্কিত চাহিদা নিরূপন এবং তা মূল্যায়ন করা।
অধিদপ্তরের আওতাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ন, হিসাব সংরক্ষণ এবং অডিটের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রকল্পসমূহের পণ্য, সেবা ও পূর্তকাজের ক্রয় সম্পাদন করা।

১৫। জাতীয় শিক্ষার বাজেট প্রণয়নঃ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন করে। যেমন, চলতি অর্থবছরে সরকার জাতীয় বাজেটের ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছে শিক্ষাখাতে। টাকার অঙ্কে যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। সামগ্রিকভাবে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৫২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এই কাজ করে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষাখাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে সুযোগ ও সম্পদের প্রয়োজন।

উপসংহারঃ

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যেমন অনেক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এ সত্তেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক সমালোচনাও রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্বলতা এবং ব্যাংক খাতে কিছু অব্যবস্থাপনার কারণে বারবার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে তারা। এছাড়া পাবলিক পরিক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস তো আছেই। দুর্নীতি ও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। এক্ষেত্রে তাদেরকে আরও সাবধান হতে হবে। আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। তাহলেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভালভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল ধরতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are makes.