অর্থনৈতিক সংকট ঘিরে সহিংস বিক্ষোভে টালমাটাল শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। পাঁচবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ও শ্রীলঙ্কার ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শপথ নিতে পারেন। দলীয় সূত্রের বরাত দিয়ে শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর এসব কথা জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন রনিল বিক্রমাসিংহে। সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে গত সোমবার পদত্যাগ করার পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শপথ নেওয়ার পর কলম্বোয় একটি মন্দির পরিদর্শনে যাবেন রনিল বিক্রমাসিংহে। এরপর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিলেও দেশটির চলমান অচলাবস্থা শিগগিরই কাটছে না বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ছাড়া জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে কারফিউ উপেক্ষা করে কলম্বোয় তাঁর কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ চলছে। সেখানে বিক্ষোভে অংশ নেন মোহনদাস অরবিন্দ নামের একজন। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না রাজাপক্ষে পরিবারের কেউ সরকারে থাকুক।’
করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। ঋণের চাপ আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে।
এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। গত শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। বিক্ষোভের লাগাম টানতে এরপর জারি করা হয় কারফিউ।
এরই মধ্যে সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভে রাজাপক্ষের অনুগত কয়েক ডজন ব্যক্তির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামবানটোটায় রাজাপক্ষের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। সহিংসতা বন্ধে ‘দেখামাত্র গুলির’ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। যদিও সরকার পরে বিষয়টি অস্বীকার করেছে।